আজ ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পানির দাম বৃদ্ধির প্রস্তাব : প্রতিবাদে ওয়াসার সামনে সমাবেশ রোববার

ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে ওয়াসা ভবনের সামনেই নাগরিক প্রতিবাদ সমাবেশের ডাক দিয়েছে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ নামে একটি সংগঠন। আগামীকাল রোববার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে ওয়াসা ভবনের সামনে এ নাগরিক প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি।

শনিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, আগামীকাল কারওয়ান বাজার এলাকায় ওয়াসা অফিসের সামনে পানির মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে নাগরিক প্রতিবাদ সমাবেশ করব আমরা। গতবার করোনাকালেও ঢাকা ওয়াসা গ্রাহক পর্যায়ে পানির দাম বাড়িয়েছে। আবারও পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে তারা। এটি অবশ্যই একটি অমানবিক বিষয়, কারণ এতে করোনাকালে সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, পরিচালন ব্যয়, ঘাটতিসহ বিভিন্ন অজুহাতে আবাসিক এবং বাণিজ্যিক খাতে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো এবং বারবার এমন মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব অযৌক্তিক। পাশাপাশি এটি গ্রাহকের ওপর জোর করে চাপিয়ে দেওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়। সব বিষয় বিবেচনা করে এ মুহূর্তে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করা অবশ্যই উচিত নয়। তাই তাদের এই সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আমরা কর্মসূচি পালন করব।

জানা গেছে, বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে এ কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকবেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সিপিবির কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স। এছাড়াও উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন রাজনৈতিক সামাজিক ও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নাগরিক।

গত বুধবার (৯ ফেব্রুয়ারি) এক সভায় ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খান বলেছিলেন, পানির দাম ন্যূনতম ২০ শতাংশ বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হয়েছে। যদি সরকার এরচেয়ে বেশি বাড়তে চায় সেক্ষেত্রে ওয়াসার কোনো আপত্তি নেই।

তিনি বলেন, বোর্ড সভায় আমরা সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ দাম বাড়াতে পারি। আমরা চাই স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে। তাই উৎপাদন খরচের সঙ্গে সমন্বয় করতে আমরা সর্বনিম্ন ২০ শতাংশ বা আরও বেশি দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছি। এতে সরকারের ভর্তুকি কমে আসবে। সরকার কত শতাংশ পানির দাম বাড়াবে, আর কত ভর্তুকি দেবে সেটা সরকারের বিষয়। সরকার যা নির্ধারণ করবে আমরা সেই অনুযায়ী মূল্য নির্ধারণ করব। তবে বর্তমানে মানুষকে ১৫ টাকা ১৮ পয়সায় যে পানি দেওয়া হচ্ছে তার উৎপাদন খরচ প্রায় ২৫ টাকা। মূলত ভর্তুকি কমাতেই পানির মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে।

এর আগে গত দুই বছরে দুবার আবাসিক ও বাণিজ্যিক পর্যায়ে পানির দাম বাড়ায় ঢাকা ওয়াসা। এবারও আরেক দফায় পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু বোর্ড সভায় ১৩ সদস্যদের বেশিরভাগই করোনাকালীন সময়ে পানির দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন। ২০০৯ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৪ বার ওয়াসার পানির দাম বাড়ানো হয়েছে।

বর্তমানে আবাসিক ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানির দাম পড়ছে ১৫ টাকা ১৮ পয়সা। এ মূল্য বাড়িয়ে ২১ টাকা ২৫ পয়সা করার প্রস্তাব করা হয়েছে ওয়াসার বোর্ড সভায়। এছাড়া বাণিজ্যিক সংযোগের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার লিটার পানির বর্তমান দাম ৪২ টাকা। এর দাম বাড়িয়ে ৫৮ দশমিক ৮ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category