আজ ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শীতে রুক্ষ ত্বকে প্রাণ ফেরাতে যা প্রয়োজন

শীতকালের মৌসুমি বাতাসে ত্বক হয়ে যায় নিষ্প্রভ ও নিষ্প্রাণ। এতে ত্বকের স্বাভাবিক উজ্বলতা হারিয়ে যায় নিমিষেই। এছাড়া পরিবর্তিত আবহাওয়ার সাথে ত্বক খাপ খাওয়াতে যে সময় নেই তাতেই এমনটা হয়ে থাকে।

তবে এর জন্য দুশ্চিন্তা করার কোন প্রয়োজন নেই। একেবারেই ঘরোয়া ও প্রাকৃতিক উপাদানের সহজ ব্যবহারেই ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

হলুদ

হলুদে থাকা কারকিউমিন হলো এক প্রকারের বায়োএকটিভ উপাদান। যা ত্বকের ফটোএইজিং প্রক্রিয়াকে স্লথ করে দেয় এবং ত্বকের উজ্জ্বলতাকে ভেতর থেকে বের করে আনে।

হলুদ ব্যবহারের জন্য এক চা চামচ হলুদ গুঁড়া, আধা চা চামচ মধু ও এক চা চামচ দুধ একসাথে মিশিয়ে ঘন পেস্ট তৈরি করতে হবে। তৈরিকৃত এই পেস্টটি মুখের ত্বকে ম্যাসাজ করে ১০ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে। সময় হয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানিতে মুখের ত্বক ধুয়ে নিতে হবে। পুরো শীতকাল জুড়ে এই নিয়মে হলুদ ব্যবহার করা যাবে। ত্বকের প্রয়োজন বুঝে সপ্তাহে একবার ব্যবহারই যথেষ্ট।

নারিকেল তেল

নারিকেল তেলে থাকা লরিক অ্যাসিড (Lauric Acid) এর জন্যে প্রাকৃতিক এই তেলটি ত্বকের জন্য দারুণ ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। এর ফলে নারিকেল তেলের সঠিক ব্যবহারে ত্বকের শুষ্কতা কমে আসবে এবং ত্বক প্রাণবন্ত হবে।

ব্যবহারের জন্য এক চা চামচ নারিকেল তেল, এক চা চামচ মধু, এক চা চামচ টকদই একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করতে হবে। এই পেস্ট মুখ, গলা ও ঘাড়ে ম্যাসাজ করে ১৫-২০ মিনিট রেখে দিতে হবে এবং সময় হয়ে গেলে পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করা যাবে নারিকেল তেলে তৈরি এই ফেসমাস্কটি।

আলুর রস

ত্বক পরিষ্কার করার ক্ষেত্রে আলুর রস খুবই উপকারী একটি উপাদান। এতে থাকা স্টার্চ ত্বকের ধরণ বুঝে প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে। পাশাপাশি এর অ্যান্টিসেপটিক ধর্ম ত্বকের কোষের ছোটখাটো সমস্যাকে দূর করতে কাজ করে। বিধায় সাধারণ এই উপাদানটিই ত্বকের জন্য দারুণ উপকারী হিসেবে বিবেচিত হয়।

আলুর রস ব্যবহারের জন্য প্রথমেই একটি আলু গ্রেট করে সেটা থেকে রস তৈরি করে নিতে হবে। এবারে দুই টেবিল চামচ আলুর রস, এক চা চামচ লেবুর রস ও এক চা চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে নিতে হবে। তৈরিকৃত এই মিশ্রণটি মুখ ও গলায় ম্যাসাজ করে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে শুকানোর জন্য। শুকিয়ে আসলে ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ও গলা ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে। যাদের ত্বক স্পর্শকাতর তারা লেবুর রস ব্যবহার না করলেই ভালো হবে। সপ্তাহে দুই দিন এই মিশ্রণ ব্যবহারেই লক্ষণীয় ফলাফল পাওয়া যাবে।

অ্যালোভেরা জেল

প্রাকৃতিক অ্যালোভেরা পাতার জেল ব্যবহারের কোন বিকল্প নেই ত্বকের যেকোন সমস্যার ক্ষেত্রেই। আর্দ্রতাপূর্ণ অ্যালো জেলে রয়েছে গ্লুকোম্যানন (Glucomannan), যা কোলাজেন সিনথেসিসের প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করে। এছাড়া মিউকপলিস্যাকারাইড ত্বকের আর্দ্রতাকে বাড়াতে কাজ করে বলে ত্বক কোমল ও উজ্জ্বল থাকে।

অ্যালোভেরা পাতার জেল ব্যবহারের জন্য এক টেবিল চামচ অ্যালো জেল, এক টেবিল মধু ও একটি ছোট শসা প্রয়োজন হবে। এবারে প্রথমেই শসাটি ব্লেন্ড করে এতে অ্যালো জেল ও মধু মিশিয়ে পুনরায় ব্লেন্ড করে নিতে হবে। তৈরিকৃত ঘন পেস্টটি মুখে ও ঘাড়ে ম্যাসাজ করে ২০ মিনিট রেখে দিয়ে এরপর ধুয়ে ফেলতে হবে। সকল ত্বকের সাথে মানানসই এই মিশ্রণটি সপ্তাহে দুই-তিন দিন ব্যবহার করা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category