৫ বছর দায়িত্ব পালনে সফল হয়েছি- প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা রোববার এমন দাবি করেছিলেন রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে। ২৪ ঘন্টা না পেরোতেই সেই দাবি থেকে সরে আসলেন তিনি। এবার বললেন শতভাগ সফল হয়নি । ভুল ভ্রান্তি হয়েছে।
আজ (সোমবার) বিদায়ী সংবাদ সম্মলনে সিইসি এ সব কথা বলেন। নির্বাচন ভবনের লেক ভিউ চত্বরে এটি অনুষ্ঠিত হয়।
সিইসি হিসেবে দায়িত্বে থাকা সবশেষ এই সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ চেষ্টা ছিল, তবে শতভাগ সফল হতে পারিনি। কিছু ভুল ভ্রান্তি ছিল। নিরপেক্ষতা বজায় রাখার চেষ্টা করেছি । রাজনৈতিক দলগুলোর আস্থা অর্জনের চেষ্টা ছিলো। যদিও কোন কোন রাজনৈতিক দলের আস্থা অর্জন সম্ভব হয়নি । সবাইকে খুশি করতে পেরেছি তা বলা যাবে না ।
নূরুল হুদা বলেন, করোনার মধ্যে নির্বাচন করা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এটা একটা সাফল্য । ব্যর্থতা হল নির্বাচনে অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন।
৫ বছরের দায়িত্বকালে অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি। সেগুলো সফলভাবে মোকাবিলাও করেছি।
ইসি সরকারের মুখপাত্র ছিল কমিশনার মাহবুব তালুকদারের এমন অভিযোগের ব্যাপারে তিনি কোন উত্তর দেননি। বলেন, তিনি (মাহবুব তালুকদার) আসেননি। তার অনুপস্থিতে কিছুই বলতে চাই না।
নূরুল হুদা বলেন, ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আপনারাই দেখিয়েছেন লাইন দিয়ে মানুষ ভোট দিচ্ছে । বিদেশী গণমাধ্যমও ঐ নির্বাচনে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। অভিযোগকারীরা আদালতে যায়নি।
সিইসি বলেন, বরিশাল সিটি নিবার্চনটা তেমন ভাল হয়নি। ভোটের দিন যে সহিংসতা হয়েছে তার অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছ থেকে আসেনি । যে কারণে ভোট বাতিল করা সম্ভব হয়নি।
সিইসি কেএম নূরুল হুদা বলেন, ‘আমরা ৬ হাজার ৬৯০টি নির্বাচন করেছি। রুটিন কাজের বাইরেও অনেক কাজ করেছি। আইন সংষ্কারের বেশ কিছু কাজ করেছি। আরপিও বাংলায় রূপান্তরসহ অনেকগুলো বিধিমালা করেছি। ’
সিইসি বলেন, ‘২৪ হাজার ৮৮১ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়েছি। বিশেষ করে ইভিএমে। করোনার কারণে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে পারিনি। স্থানীয় সরকারের সব নির্বাচন সম্পন্ন করেছি। ইভিএম বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ ছিল। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে করতে পেরেছি। এনআইডি সহজীকরণ করা হয়েছে। ভাণ্ডার সমৃদ্ধ হয়েছে। আমরা মনে করি, আমাদের ওপর যে দায়িত্ব ছিল কঠোর পরিশ্রম করে সে দায়িত্ব পালন করেছি। ’
সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ ও যুগ্ম সচিব এসএম আসাদুজ্জমান উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, রাষ্ট্রের সবগুলো কাঠামো জড়িত থাকে নির্বাচনে । দু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় সবাইকেই আইনের আওতায় আনা হয়েছে। শপথ অনুযায়ী পূর্ণাঙ্গ দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করেছি । ভালমন্দের বিচার আপনাদের কাছে।
২০১৭ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি সাবেক বেসামরিক আমলা কেএম নূরুল হুদাকে সিইসি, মাহবুব তালকুদার, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও সামরিক আমলা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শাহাদাত হোসেন চৌধুরীকে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
সংবিধান অনুযায়ী, ৫ বছর দায়িত্ব শেষে তাদের মেয়াদ শেষ হলো আজ (১৪ ফেব্রুয়ারি)।
Leave a Reply