আজ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

অগ্নিঝরা মার্চ

শুরু হলো অগ্নিঝরা গৌরবের মার্চ মাস। স্বাধীনতার ৫১ বছর পূর্ণ হবে এ মাসেই। বাঙালির জীবনে নানা কারণে মার্চ মাস অন্তর্নিহিত শক্তির উৎস। এ মাসেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এই মাসের ১৭ তারিখ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মেছিলেন তিনি।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার মাস মার্চ এবার এসেছে ভিন্ন বার্তা নিয়ে। গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে মুজিববর্ষ ঘোষণা করা হলেও এ মাসেই শেষ হচ্ছে মুজিববর্ষের কর্মসূচি। অপরদিকে একই সময়ে পালন করা হচ্ছে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীও। করোনার আবহ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রীয়, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে এ মাসে অনুষ্ঠিত হবে নানা অনুষ্ঠান।

এর আগে একাত্তরের এ মাসেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধ শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানি শাসকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘সাত কোটি মানুষকে দাবায়ে রাখতে পারবা না। আমরা যখন মরতে শিখেছি, তখন কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম, আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। জয় বাংলা।’

১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সাবেক রেসর্কোস ময়দান-আজকের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেওয়া ঐতিহাসিক ভাষণের সময় মুহুর্মুহু গর্জনে উত্তাল ছিল জনসমুদ্র। লাখোকণ্ঠের একই আওয়াজ উচ্চারিত হতে থাকে দেশের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে। ঢাকাসহ গোটা দেশে পতপত করে উড়ছিল সবুজ জমিনের ওপর লাল সূর্যের পতাকা।

১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষার জন্য যে আগুন জ্বলে উঠেছিল—সে আগুন যেন ছড়িয়ে পড়ে বাংলার সর্বত্র। এরপর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা এবং ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সিঁড়ি বেয়ে একাত্তরের মার্চ বাঙালির জীবনে নিয়ে আসে নতুন বারতা। একাত্তরের ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ঘোষণা করেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা। এর আগে ২৫ মার্চ রাত ১টার অল্প পরে বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানি সেনারা গ্রেপ্তার করে তাঁর বাড়ি থেকে।২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানিরা বাঙালির কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেওয়ার হীন লক্ষ্যে ‘অপারশেন সার্চলাইট’ নামে বাঙালি নিধনে নামে। ঢাকার রাস্তায় বের হয় পাকিস্তানি সৈন্যরা। নির্বিচারে হাজার হাজার লোককে হত্যা করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের হত্যা করা হয়। এর পরের ঘটনা প্রবাহ প্রতিরোধের ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ‘ঘরে ঘরে দুর্গ’ গড়ে তোলা হয়। আবালবৃদ্ধবণিতা যোগ দেয় মহান মুক্তিযুদ্ধে। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের পর ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জনের মধ্য দিয়ে জাতি লাভ করে স্বাধীনতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category