আজ ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

তেলসহ ৬ নিত্যপণ্য কী পরিমাণ কতদিন মজুত করা যায়

দেশে তেল, চাল, ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপণ্যের বাজার ঊর্ধ্বমুখী। এ সুযোগে অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটগুলো এসব পণ্য অবৈধভাবে মজুত করছেন। এরইমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে অবৈধ মজুতকারীদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জরিমানার পাশাপাশি উদ্ধার করা হচ্ছে অবৈধভাবে মজুত করা পণ্যসামগ্রী।

গত ৫ মার্চ রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে আবুল খায়ের ট্রেডার্স নামের এক দোকানে থাকা ৬০ ব্যারেল ভোজ্যতেল জব্দ করে দুই লাখ টাকা জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত। একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। গতকাল শনিবার (১২ মার্চ) কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লায়েকুজ্জামানের বাড়ি থেকে মজুত করা ৫১২ লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

কী পরিমাণ খাদ্যশস্য বা খাদ্যসামগ্রী (চাল, ধান, গম, চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল) কতদিন মজুত করা যাবে, তা নির্ধারণ করে ১৯৫৬ সালের কন্ট্রোল অব অ্যাসেনশিয়াল কমোডিটির অ্যাক্ট-এর অধীনে ২০১১ সালের ৪ মে একটি আদেশ জারি করা হয়।

আদেশে বলা হয়েছে, সরকারের দেওয়া লাইসেন্স ছাড়া কোনো ব্যবসায়ী এক টনের বেশি খাদ্যশস্য বা খাদ্যসামগ্রী নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে না।

আদেশ অনুযায়ী, লাইসেন্সধারী আমদানিকারক, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী ও চালকল মালিক বিভিন্ন মেয়াদে বিভিন্ন পরিমাণ পণ্য মজুত রাখতে পারবেন।

পাইকারি পর্যায়ে একজন ব্যবসায়ী সর্বোচ্চ ৩০০ মেট্রিকটন ধান ও চাল ৩০ দিন পর্যন্ত মজুত রাখতে পারবেন। ধান ও চালের ক্ষেত্রে খুচরা পর্যায়ে ১৫ টন ১৫ দিন মজুত রাখা যাবে। আমদানিকারক আমদানি করা ধান-চাল শতভাগ ৩০ দিন পর্যন্ত মজুত রাখতে পারবেন।

চালকল মালিক পর্যায়ে অটোমেটিক, মেজর ও হাসকিং চালকলের ক্ষেত্রে পাক্ষিক (১৫ দিনে) ছাঁটাই ক্ষমতার ৩ গুণ ধান ৩০ দিন পর্যন্ত মজুত করা যাবে। তবে চালের ক্ষেত্রে অটোমেটিক ও মেজর মিলের ক্ষেত্রে অনুমোদিত মজুতের পরিমাণ পাক্ষিক ছাঁটাই ক্ষমতার দ্বিগুণ। এ পরিমাণ চাল ১৫ দিন মজুত রাখা যাবে।

গম ও গমজাত দ্রব্যের ক্ষেত্রে পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ২০০ টন ৩০ দিন, খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১০ টন ১৫ দিন মজুত করা যাবে। আমদানিকারক আমদানি করা গম ও গমজাত দ্রব্য শতভাগ ৩০ দিন পর্যন্ত মজুত করতে পারবেন।

চিনি পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫০ টন ৩০ দিন, খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫ টন ২০ দিন এবং আমদানি পর্যায়ে আমদানির ৫০ ভাগ ৪০ দিন মজুত করা যাবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে পাইকারি পর্যায়ে পরিশোধিত সয়াবিন ও পামওয়েল সর্বোচ্চ ৩০ টন ৩০ দিন এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৫ টন ২০ দিন মজুত করা যাবে। ভোজ্যতেল আমদানিকারকরা আমদানির ২৫ ভাগ সর্বোচ্চ ৫০ দিন পর্যন্ত মজুত করতে পারবেন।

এছাড়া ডাল পাইকারি পর্যায়ে সর্বোচ্চ ৪০ টন ৩০ দিন, খুচরা পর্যায়ে ৫ টন ২০ দিন মজুত করা যাবে। আমদানি পর্যায়ে আমদানি করা ডালের ২৫ ভাগ ৬০ দিন মজুত করা যাবে।

এসআরও-তে বলা হয়েছে, আমদানিকারক বা পাইকারি বিক্রেতা অনুমোদিত মেয়াদের মধ্যে অনুমোদিত মজুত নিয়ন্ত্রণ বহির্ভূত কারণে বিক্রি করতে না পারলে অনুমোদিত মেয়াদ শেষ হওয়ার তিনদিনের মধ্যে নির্ধারিত ছক ও পদ্ধতিতে সরকারের নির্ধারিত কর্মকর্তাকে জানাবেন।

অনুমোদিত প্রত্যেক লাইসেন্সধারী ব্যবসায়ীকে খাদ্যসামগ্রী আমদানি, ক্রয়, মজুত ও বিক্রয়ের হিসাব লাইসেন্স দেওয়া কর্তৃপক্ষের কাছে নির্ধারিত ছকে পাক্ষিক ভিত্তিতে প্রতিবেদন আকারে দাখিল করতে হবে।

অপরদিকে সরকারের মনোনীত কর্মকর্তা ও লাইসেন্স প্রদানকারী কর্তৃপক্ষকে প্রাপ্ত তথ্যাদি প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে বলেও ওই এসআরওতে উল্লেখ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category