আজ ২২শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক নতুন প্রজন্মের হাত ধরে : জয়

দেশবাসীকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, করোনামুক্ত দেশে আবারও প্রাণচাঞ্চল্য ফিরিয়ে আনুক এবারের বৈশাখ। নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই সম্প্রীতির পথে হাঁটতে শুরু করুক সবাই। বাংলা ভাষা এবং হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটুক আমাদের নতুন প্রজন্মের হাত ধরে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেন, ‘যে ভাষা ও সংস্কৃতির জন্য প্রায় দুই যুগ সংগ্রাম করেছেন আমাদের পূর্বপুরুষরা, যে শোষণমুক্ত সাম্যভিত্তিক স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন ত্রিশ লাখ মানুষ, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শিতায় আজ সেই দেশ ডিজিটাল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’

‘পূর্বপুরুষদের অনিঃশেষ ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে, এই দেশে চিরায়ত বাঙালি সংস্কৃতির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। আবহমান বাংলার প্রধানতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হলো অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সমাজের সবাই মিলেমিশে থাকা। শান্তি ও সমৃদ্ধির আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে শুরু হোক নতুন বছর।’

তিনি লিখেন, ‘আপনারা জানেন- দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রাম এবং ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে যে চারটি স্তম্ভের ওপর বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হলো ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’। সবাই সবার নিজের ধর্ম পালন করবে, অন্যদের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে, ধর্ম নিয়ে কেউ সহিংসতা করবে না- এটাই হলো ধর্মনিরপেক্ষতার মূল কথা। এর সঙ্গে নৃতাত্ত্বিকভাবে চলে আসা বাঙালি সংস্কৃতির কোনো বিভেদ নেই।’

‘সাংস্কৃতিকভাবে আমরা অনেক সমৃদ্ধ জাতি। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলন থেকেই বাঙালি জাতি বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছিল। অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত সেই স্বাধীন দেশে নিজেদের সংস্কৃতি লালন করা প্রতিটি নাগরিকের নৈতিক দায়িত্ব।

প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা আরও লিখেন, ‘ইতিহাস বলে, ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারে নাই। আমাদের দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকই ধর্মপ্রাণ মুসলমান, কিন্তু ধর্মান্ধ নন। আমাদের পূর্বপুরুষরাই একসময় বাংলা ভাষা ও বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। যার ফলে, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনে ২৩৭টি মুসলিম আসনের মধ্যে ২২৩টিতে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। বিপরীতে মাত্র ৯টি আসন পেয়ে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যায় ধর্ম ব্যবসায়ীরা। বাংলার মানুষ ঐতিহ্যগতভাবে সরলপ্রাণ ও ধর্মপ্রাণ, কিন্তু ধর্ম প্রদর্শনকারী বা ধর্ম ব্যবসায়ী নয়।’

‘প্রত্যেক বাঙালি শান্তিপূর্ণভাবে নিজ নিজ ধর্ম পালন করুন এবং একইসঙ্গে হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য লালন করুন। যারা এটি নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করতে চায়, তারা বাংলাদেশকে, বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এবং সংস্কৃতিকে ধারণ করে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে আসুন আমরা সবাই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     More News Of This Category