রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। দীর্ঘদিন সয়াবিন তেলের সংকট থাকার পর গত রবিবার থেকে রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ও অলিগলির দোকানে পাওয়া যাচ্ছে বোতলজাত সয়াবিন তেল। বাজারে তেলের সরবরাহ থাকায় ক্রেতাদের দোকান থেকে তেল কিনতে আর ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না। তবে আগের বোতলে নতুন দাম সাঁটানো সয়াবিন তেল পাচ্ছেন ক্রেতারা।
খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে এখন সয়াবিন তেল রয়েছে।কোনো সংকট নেই। বিভিন্ন কম্পানি তেল দিয়েছে। ক্রেতারা বলছেন, বাজারে এখন তেল পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু অনেক দোকানেই আগের মজুদ করে রাখা তেল এখন নতুন দামে বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে মেসার্স নূরজাহান স্টোরের ব্যবসায়ী মো. তারেক গতকাল সোমবার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আমরা চাহিদা অনুযায়ী কম্পানিগুলো থেকে তেল পাচ্ছি। ’
গুলশান কালাচাঁদপুরের গলির দোকান বিসমিল্লাহ স্টোরের ব্যবসায়ী সুজন মিয়া কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দাম বাড়ানোর পর গত রবিবার দুই লিটার বোতলের এক কার্টন তেল এক কম্পানি দিয়ে গেছে। কম্পানির লোকরা বলে গেছেন অর্ডার দিলে তেল দিয়ে যাবেন। ’
জোয়ারসাহারা বাজারের খুচরা দোকান সিয়াম স্টোরের ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ক্রেতাদের এখন তেল না পেয়ে খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে না। আমাদের নিজস্ব কিছু ক্রেতা রয়েছেন, যাঁরা ঈদের পর তেল না পেয়ে ফিরে গিয়েছিলেন, তাঁদের ফোন দিয়ে জানিয়ে দেওয়ার পর তাঁরাও এখন তেল নিয়ে যাচ্ছেন। ’
রমজানের মাঝামাঝি সময় থেকেই খুচরা বাজারে সয়াবিন তেলের সরবরাহ কমে যায়। এর ফলে সারা দেশে সংকট তৈরি হতে থাকে। আর ঈদের এক সপ্তাহ আগে রাজধানীর খুচরা দোকানগুলোতে সয়াবিন তেল পাওয়া যায়নি। বাজারে তেলের সংকট দেখা দেওয়ার মধ্যেই ঈদের ছুটির পর প্রথম কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ভোজ্য তেলের দাম সমন্বয় করে বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটার ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়। নতুন দাম অনুযায়ী পাঁচ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৯৮৫ টাকায়। এ ছাড়া খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার ১৮০ ও পাম তেল ১৭২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে তেলের দাম বাড়ানোর পর কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আগের মজুদ করা বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি করছে নতুন দামে। এমন অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে বিশেষ অভিযান শুরু করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। গতকাল ডেমরা রোডের কাজলা ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স অদ্বিতি ট্রেডিং, মেসার্স সিফাত ট্রেডিং ও মেসার্স মিন্টু স্টোরের মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং র্যাব-৩-এর যৌথ অভিযানে তিন দোকানের গুদাম থেকে মোট ২৯ হাজার ৫৮০ লিটার খোলা পাম অয়েল ও সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়।
Leave a Reply